
ডেইলি কুড়িগ্রামঃ
ঝিনাইদহ-৪ আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য (এমপি) আনোয়ারুল আজীম আনারকে কীভাবে হত্যা করা হয়েছে, কীভাবে তার মরদেহ গুম করার চেষ্টা চালানো হয়েছে এসব তথ্য এখন সবই বেরিয়ে আসছে।
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার নিউ টাউনের একটি অভিজাত অ্যাপার্টমেন্টের ফ্ল্যাটে গত ১৩ মে নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হন (এমপি) আনার।
এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সরাসরি জড়িত জিহাদকে গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে নিয়েছে কলকাতার পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদে নানা চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে জিয়াদ।
জানা গেছে, আনোয়ারুল আজীমের দেহ ৮০ টুকরো করে নিউটাউনের ভাঙ্গড় এলাকার নানা জায়গায় ছড়িয়ে দেয় কসাই জিহাদ। আর এই কাজের বিনিময়ে সে ৫ হাজার রুপি পায়।
ভারতের পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে জিহাদ এসব কথা স্বীকার করেছে বলে জানিয়েছেন হিন্দুস্তান টাইমস। দেশটির পুলিশ কর্মকর্তারা বলেছেন, মরদেহের টুকরোগুলো যেহেতু জলাশয়ে ফেলা হয়েছে, তাই সব অংশ উদ্ধার করা কঠিন।
এদিকে পুলিশের গোয়েন্দা সূত্র বলছে, এমপি আনার হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক আখতারুজ্জামানের কলকাতায় যাওয়ার দুই মাস আগেই জিহাদকে ডেকে আনা হয়।
জিহাদ জানায়, আখতারুজ্জামানের নির্দেশে তিনিসহ চারজন এমপি আনারকে নিউ টাউনের ওই ফ্ল্যাটে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, তদন্তকারীদের নজরে এসেছেন বাংলাদেশের বাসিন্দা শেলেস্তা রহমান নামে এক তরুণী। খুনের দিন সম্ভবত তিনিই আনোয়ারুলকে নিউটাউনের ঐ ফ্ল্যাটে ডেকে নিয়ে গিয়েছিলেন। এরই মধ্যে শেলেস্তাকে বাংলাদেশে গ্রেফতার করে রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।
গত ১২ মে চিকিৎসা করানোর জন্য কলকাতায় যান সংসদ সদস্য এমপি আনোয়ারুল আজিম। ১৩ তারিখ নিউটাউনের ফ্ল্যাটে খুন হন সাংসদ। দুদিন নিখোঁজ থাকার পর তার হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি ভারতের পুলিশ জানতে পারে। হত্যায় জড়িত সন্দেহে বাংলাদেশেও তিনজন গ্রেফতার হয়েছেন।
অন্যদিকে বাংলাদেশে পালানোর সময় বনগাঁ থেকে গ্রেপ্তার হয় কসাই জিহাদ ও সিয়াম। বাংলাদেশের বাসিন্দা হলেও মুম্বাইতে কাজ করতেন জিহাদ।
জিজ্ঞাসাবাদে জিহাদ স্বীকার করেছে, আনোয়ারুলকে খুন করার পর বনগাঁ সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে পালানোর ছক করেছিল তারা। কিন্তু ধরা পড়ে যান। খুনের পর সাংসদের দেহ ৮০ টুকরো করে ভাঙ্গড়ের জলাশয়ে ফেলা হয়েছে বলেও স্বীকার করেছে সে। লাশের টুকরোগুলো উদ্ধারে বৃহস্পতিবার রাত থেকে জলাশয়ে তল্লাশি চলছে। তবে এখনও কিছুই উদ্ধার হয়নি।
ভারতে গ্রেপ্তার হওয়া অভিযুক্ত সিয়াম ও জিহাদ জানান, নিউটাউনের অভিজাত আবাসনের ফ্ল্যাটে প্রথমে ক্লোরোফর্ম দিয়ে অজ্ঞান করা হয় আনোয়ারুলকে এবং পরে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়। মৃত্যু নিশ্চিত করতে ভারী বস্তু দিয়ে সাংসদের মাথায় আঘাত করা হয়েছিল। এরপর রান্নাঘরে নিয়ে গিয়ে দেহ টুকরো টুকরো করা হয়। খুনের পর হাড়, মাংস পৃথক করে হলুদ মাখিয়ে দেহের টুকরোগুলো নানা জায়গার জলাশয়ে ফেলা হয়।
তদন্তে উঠে এসেছে এই খুনের মাস্টারমাইন্ড আক্তারুজ্জামান শাহীন নামের বাংলাদেশের এক ব্যক্তি। তার সঙ্গে আনোয়ারুলের বন্ধুত্ব ছিল। আর ঐ তরুণীও শাহীনের পরিচিত। ২০০ কোটি টাকার লেনদেন নিয়ে আনারের সঙ্গে বিরোধ ছিল শাহিনের।