ঢাকা ১০:৫৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২
শিরোনাম ::
ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা-লুটপাট, সারা দেশে গ্রেফতার ৬২ স্বাস্থ্য-কল্যাণে বিনিয়োগ বৃদ্ধির আহ্বান বাংলাদেশের আমরা তোমাদের মানবতা ও মহত্ত্ব ভুলব না: ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রদূত একজন শহীদ জিয়ার আদর্শের সৈনিক, প্রাইম গ্রুপের চেয়ারম্যান- আবু জাফর আহমেদ বাবুল রূপসায় দৈনিক স্বাধীন কাগজ পত্রিকার খুলনা জেলার পক্ষ থেকে গুনীজন সংবর্ধনা প্রদান মরুর ফল সাম্মাম চাষে সফল ব্যাংক কর্মকর্তা জুয়েল মিয়ানমার নিহতদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন ঈদে একদিন বন্ধের পর আজ ফের মেট্রোরেল চলাচল শুরু সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান খালেদা জিয়ার প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশে মিয়ানমারে ত্রাণের দ্বিতীয় মিশন পাঠালো বাংলাদেশ

পবিত্র ঈদুল ফিতর জাতীয় ঈদগাহ ময়দান প্রস্তুত: কত দিন লাগল, খরচ কত

জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে একসঙ্গে ৩৫ হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারেন। তবে আশপাশের খালি জায়গায়, সড়কেও অনেকে নামাজ আদায় করেন। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) তথ্য বলছে, এই ময়দান ও আশপাশের জায়গায় সব মিলিয়ে প্রায় ৯০ হাজার মুসল্লি একসঙ্গে ঈদের নামাজ আদায় করতে পারেন।

ডিএসসিসির কর্মকর্তারা বলছেন, ৩ লাখ ২২ হাজার ৮০০ বর্গফুট আয়তনের ঈদগাহ মাঠ তৈরির কাজটি অনেক বড় কর্মযজ্ঞ। এবারের ঈদুল ফিতরের নামাজের জন্য ঈদগাহ মাঠ পুরোপুরি প্রস্তুত করা হয়েছে।

ঢাকা দক্ষিণ সিটির প্রকৌশল বিভাগ সূত্র বলছে, এবার ঈদগাহ ময়দান প্রস্তুত করতে সংস্থাটির ১ কোটি ১৫ লাখ টাকার মতো খরচ হচ্ছে। মেসার্স আবুল হক অ্যান্ড সন্স নামের একটি প্রতিষ্ঠানকে মাঠ প্রস্তুতের কাজ দেওয়া হয়েছে।

জানতে চাইলে মেসার্স আবুল হক অ্যান্ড সন্সের প্রতিনিধি এনামুল হক প্রথম আলোকে বলেন, আবহাওয়ার তীব্রতা বিবেচনায় এবার মাঠের মধ্যে বেশি পরিমাণে ফ্যান রাখা হয়েছে। তাঁর হিসাবে এবার সিলিং ও স্ট্যান্ড ফ্যান—সব মিলিয়ে ১ হাজার ১০০–এর বেশি রাখা হয়েছে। এর মধ্যে সিলিং ফ্যানের সংখ্যা ৯০০–এর মতো।

মাঠের প্যান্ডেল তৈরি করতে ৪৩ হাজারের বেশি বাঁশ ব্যবহার করা হয়েছে
মাঠের প্যান্ডেল তৈরি করতে ৪৩ হাজারের বেশি বাঁশ ব্যবহার করা হয়েছেছবি: সময়ের আয়োজন

ঈদের নামাজের জন্য জাতীয় ঈদগাহ মাঠ প্রস্তুতের কাজ পঞ্চম রমজান থেকে শুরু করা হয় বলে জানালেন এনামুল হক। সেই হিসাবে মাঠটি পুরোপুরি প্রস্তুত করতে ২৩ দিন সময় লেগেছে। দৈনিক শতাধিক কর্মী এতে কাজ করেছেন।

ঈদগাহ প্রস্তুত করার সঙ্গে যুক্ত একজন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, এ বছর মাঠের প্যান্ডেল তৈরি করতে ৪৩ হাজারের বেশি বাঁশ ব্যবহার করা হয়েছে। রশি ব্যবহার করা হয়েছে ১৫ টনের বেশি। বৃষ্টি থেকে মুসল্লিদের রক্ষা করতে প্রায় ১ হাজার ৯০০টি ত্রিপল টাঙানো হয়েছে। টিউবলাইট লাগানো হয়েছে প্রায় ৯০০টি।

ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে এবার অতি গুরুত্বপূর্ণ ৩৩০ জনের (২৫০ পুরুষ ও ৮০ নারী) জন্য বিশেষ ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের জন্য একটি ফটক, জনসাধারণের জন্য দুটি ফটক (একটি পুরুষদের জন্য, আরেকটি নারীদের জন্য) রাখা হয়েছে। একসঙ্গে ১১৩ জন পুরুষ ও ২৭ জন নারীর অজুর ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

জানতে চাইলে ঢাকা দক্ষিণ সিটির অঞ্চল-১-এর নির্বাহী প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ঈদগাহ ময়দান পরিপূর্ণ হওয়ার পর পূর্ব পাশের সড়ক, প্রেসক্লাবের সামনে সড়ক হয়ে পুরানা পল্টন মোড় পর্যন্ত সড়কে দাঁড়িয়ে মুসল্লিরা নামাজ আদায় করেন। তারই অংশ হিসেবে পূর্ব দিকে পুরানা পল্টন মোড়, উত্তর দিকে মৎস্য ভবন মোড়, দক্ষিণ দিকে দোয়েল চত্বর পর্যন্ত মাইক লাগানো হয়েছে।

এদিকে গতকাল শনিবার বেলা ১১টার দিকে ঈদগাহ ময়দান পরিদর্শনে গিয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রশাসক শাহজাহান মিয়া। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ঈদুল ফিতরের দিন জাতীয় ঈদগাহে সকাল সাড়ে আটটায় ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে। তিনি আরও বলেন, এবার দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার পূর্বাভাস নেই। এরপরও কোনো কারণে আবহাওয়া অনুকূলে না থাকলে জাতীয় ঈদগাহের পরিবর্তে সকাল নয়টায় বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে ঈদুল ফিতরের জামাত অনুষ্ঠিত হবে।

ডিএসসিসির কর্মকর্তারা বলছেন, ঈদুল ফিতরের নামাজের জন্য ঈদগাহ মাঠ পুরোপুরি প্রস্তুত করা হয়েছে
ডিএসসিসির কর্মকর্তারা বলছেন, ঈদুল ফিতরের নামাজের জন্য ঈদগাহ মাঠ পুরোপুরি প্রস্তুত করা হয়েছেছবি: সময়ের আয়োজন

ঢাকা দক্ষিণ সিটির প্রশাসক জানান, জাতীয় ঈদগাহে নামাজ আদায় করার জন্য আরামদায়ক কার্পেট বিছানো হয়েছে। তাই কাউকে জায়নামাজ সঙ্গে আনতে হবে না। প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসহায়তার জন্য দুটি মেডিকেল টিম থাকবে। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ, র‍্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা মোতায়েন থাকবেন। মুসল্লিদের জন্য অজু করার জায়গা, শৌচাগার ও সুপেয় পানির ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

গণপূর্ত ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন সূত্র জানায়, ১৯৮৭-৮৮ সালের দিকে ওই ঈদগাহকে জাতীয় ঈদগাহ হিসেবে ঘোষণা করে সরকার। বর্তমানে বাংলাদেশ হাইকোর্টের অধীনে ঈদগাহটি পরিচালিত হলেও তার দেখভাল করে গণপূর্ত বিভাগ। ঈদের নামাজের জন্য জাতীয় ঈদগাহ ময়দান প্রস্তুতির দায়িত্ব ২০০০ সাল থেকে পালন করছিল ঢাকা সিটি করপোরেশন। করপোরেশন দুই ভাগ হওয়ার পর কাজটি করছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা-লুটপাট, সারা দেশে গ্রেফতার ৬২

পবিত্র ঈদুল ফিতর জাতীয় ঈদগাহ ময়দান প্রস্তুত: কত দিন লাগল, খরচ কত

আপডেট সময় : ০৪:৪২:৩০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ এপ্রিল ২০২৫

জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে একসঙ্গে ৩৫ হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারেন। তবে আশপাশের খালি জায়গায়, সড়কেও অনেকে নামাজ আদায় করেন। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) তথ্য বলছে, এই ময়দান ও আশপাশের জায়গায় সব মিলিয়ে প্রায় ৯০ হাজার মুসল্লি একসঙ্গে ঈদের নামাজ আদায় করতে পারেন।

ডিএসসিসির কর্মকর্তারা বলছেন, ৩ লাখ ২২ হাজার ৮০০ বর্গফুট আয়তনের ঈদগাহ মাঠ তৈরির কাজটি অনেক বড় কর্মযজ্ঞ। এবারের ঈদুল ফিতরের নামাজের জন্য ঈদগাহ মাঠ পুরোপুরি প্রস্তুত করা হয়েছে।

ঢাকা দক্ষিণ সিটির প্রকৌশল বিভাগ সূত্র বলছে, এবার ঈদগাহ ময়দান প্রস্তুত করতে সংস্থাটির ১ কোটি ১৫ লাখ টাকার মতো খরচ হচ্ছে। মেসার্স আবুল হক অ্যান্ড সন্স নামের একটি প্রতিষ্ঠানকে মাঠ প্রস্তুতের কাজ দেওয়া হয়েছে।

জানতে চাইলে মেসার্স আবুল হক অ্যান্ড সন্সের প্রতিনিধি এনামুল হক প্রথম আলোকে বলেন, আবহাওয়ার তীব্রতা বিবেচনায় এবার মাঠের মধ্যে বেশি পরিমাণে ফ্যান রাখা হয়েছে। তাঁর হিসাবে এবার সিলিং ও স্ট্যান্ড ফ্যান—সব মিলিয়ে ১ হাজার ১০০–এর বেশি রাখা হয়েছে। এর মধ্যে সিলিং ফ্যানের সংখ্যা ৯০০–এর মতো।

মাঠের প্যান্ডেল তৈরি করতে ৪৩ হাজারের বেশি বাঁশ ব্যবহার করা হয়েছে
মাঠের প্যান্ডেল তৈরি করতে ৪৩ হাজারের বেশি বাঁশ ব্যবহার করা হয়েছেছবি: সময়ের আয়োজন

ঈদের নামাজের জন্য জাতীয় ঈদগাহ মাঠ প্রস্তুতের কাজ পঞ্চম রমজান থেকে শুরু করা হয় বলে জানালেন এনামুল হক। সেই হিসাবে মাঠটি পুরোপুরি প্রস্তুত করতে ২৩ দিন সময় লেগেছে। দৈনিক শতাধিক কর্মী এতে কাজ করেছেন।

ঈদগাহ প্রস্তুত করার সঙ্গে যুক্ত একজন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, এ বছর মাঠের প্যান্ডেল তৈরি করতে ৪৩ হাজারের বেশি বাঁশ ব্যবহার করা হয়েছে। রশি ব্যবহার করা হয়েছে ১৫ টনের বেশি। বৃষ্টি থেকে মুসল্লিদের রক্ষা করতে প্রায় ১ হাজার ৯০০টি ত্রিপল টাঙানো হয়েছে। টিউবলাইট লাগানো হয়েছে প্রায় ৯০০টি।

ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে এবার অতি গুরুত্বপূর্ণ ৩৩০ জনের (২৫০ পুরুষ ও ৮০ নারী) জন্য বিশেষ ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের জন্য একটি ফটক, জনসাধারণের জন্য দুটি ফটক (একটি পুরুষদের জন্য, আরেকটি নারীদের জন্য) রাখা হয়েছে। একসঙ্গে ১১৩ জন পুরুষ ও ২৭ জন নারীর অজুর ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

জানতে চাইলে ঢাকা দক্ষিণ সিটির অঞ্চল-১-এর নির্বাহী প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ঈদগাহ ময়দান পরিপূর্ণ হওয়ার পর পূর্ব পাশের সড়ক, প্রেসক্লাবের সামনে সড়ক হয়ে পুরানা পল্টন মোড় পর্যন্ত সড়কে দাঁড়িয়ে মুসল্লিরা নামাজ আদায় করেন। তারই অংশ হিসেবে পূর্ব দিকে পুরানা পল্টন মোড়, উত্তর দিকে মৎস্য ভবন মোড়, দক্ষিণ দিকে দোয়েল চত্বর পর্যন্ত মাইক লাগানো হয়েছে।

এদিকে গতকাল শনিবার বেলা ১১টার দিকে ঈদগাহ ময়দান পরিদর্শনে গিয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রশাসক শাহজাহান মিয়া। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ঈদুল ফিতরের দিন জাতীয় ঈদগাহে সকাল সাড়ে আটটায় ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে। তিনি আরও বলেন, এবার দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার পূর্বাভাস নেই। এরপরও কোনো কারণে আবহাওয়া অনুকূলে না থাকলে জাতীয় ঈদগাহের পরিবর্তে সকাল নয়টায় বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে ঈদুল ফিতরের জামাত অনুষ্ঠিত হবে।

ডিএসসিসির কর্মকর্তারা বলছেন, ঈদুল ফিতরের নামাজের জন্য ঈদগাহ মাঠ পুরোপুরি প্রস্তুত করা হয়েছে
ডিএসসিসির কর্মকর্তারা বলছেন, ঈদুল ফিতরের নামাজের জন্য ঈদগাহ মাঠ পুরোপুরি প্রস্তুত করা হয়েছেছবি: সময়ের আয়োজন

ঢাকা দক্ষিণ সিটির প্রশাসক জানান, জাতীয় ঈদগাহে নামাজ আদায় করার জন্য আরামদায়ক কার্পেট বিছানো হয়েছে। তাই কাউকে জায়নামাজ সঙ্গে আনতে হবে না। প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসহায়তার জন্য দুটি মেডিকেল টিম থাকবে। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ, র‍্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা মোতায়েন থাকবেন। মুসল্লিদের জন্য অজু করার জায়গা, শৌচাগার ও সুপেয় পানির ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

গণপূর্ত ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন সূত্র জানায়, ১৯৮৭-৮৮ সালের দিকে ওই ঈদগাহকে জাতীয় ঈদগাহ হিসেবে ঘোষণা করে সরকার। বর্তমানে বাংলাদেশ হাইকোর্টের অধীনে ঈদগাহটি পরিচালিত হলেও তার দেখভাল করে গণপূর্ত বিভাগ। ঈদের নামাজের জন্য জাতীয় ঈদগাহ ময়দান প্রস্তুতির দায়িত্ব ২০০০ সাল থেকে পালন করছিল ঢাকা সিটি করপোরেশন। করপোরেশন দুই ভাগ হওয়ার পর কাজটি করছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন।